সয়াধানগড়ায় কিশোরী কাজের মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী গ্রেফতার
সিরাজগঞ্জ পৌরএলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া মহল্লার এক গৃহপরিচারিকা (কাজের মেয়ে) কিশোরী লিপি খাতুন (১১) কে নির্যাতনের অভিযোগে জুঁথী খাতুন নামের গৃহকর্ত্রী কে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
ওই কিশোরী লিপি খাতুন কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা উপজেলার পূর্বকেদার গ্রামের বাচ্চু মিয়া ও আমিনা খাতুন এর মেয়ে। আটক জুঁথী খাতুন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া গ্রামের তারেক গোলামের স্ত্রী ও মোঃ আলী আজাহার (ব্যাংকার) এর ছেলের বউ।
শুক্রবার (২৭ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে।
জুঁথীর প্রতিবেশী আনোয়ারা খাতুন জানায়, মৃত হযরত আলীর ছেলে মোঃ আলী আজাহার (ব্যাংকার) এর বাড়ীতে মোছাঃ লিপি খাতুন (তিন) বৎসর যাবৎ বাসায় কাজ করে আসছে। কাজে ছোট-খাট ভূলত্রুটি হলেই কৌশলে লিপিকে অমানবিক নির্যাতন করতেন গৃহকর্ত্রী জুঁথী খাতুন। যে কাজ বয়স্ক মানুষকাজ শুক্রবার দুপুর থেকে মেয়েটিকে ব্যাপক মারধর করে আটকে রাখে। লিপি বাঁচাও বাঁচাও বলে আত্মচিৎকার করায় প্রতিবেশীদের ডাকতে থাকে। তখন এলাকাবাসী এঘটনাটি পুলিশকে জানালে তারা লিপিকে পুলিশ এসে উদ্ধার করে।
লিপি খাতুন জানান, বিভিন্ন সময়ে লাঠি, তরকারি নারার হাতল, গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাক ও কিল ঘুষি মারে। আমি কাউকে কিছুই বলতে পারিনা। কাউকে কিছু বল্লে আমাকে নানা ভাবে হুমকী দিতো খালাআম্মা। আজ আমাকে অনেক মেরেছে।
ভুক্তভোগীর বড় বোন মোহসিনা সুমি বলেন, আমার বোন কোনো ভুল হলেই মারধর করতো। কয়েকদিন আগে আমার বোনকে টয়লেটে আটকে রেখে নির্যাতন করে। কিছু হলেই নির্যাতন চালাতো। আমি পাসের একটি বাড়ীতে কাজ করতাম কিন্তু আমাদের সাথে দেখা করতে দিত না। আমরা দেখা করতে আসলে ভেতরে ঢুকতে দিত না। নির্যাতনের কথা না বলার জন্য ভয় দেখানো হতো। এলাকাবাসীর মুখে শুনতে পেরে আমি এখানে এসেছি। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ লিপিকে উদ্ধার করে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে পুলিশ উদ্ধার করে শুক্রবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির শরীরের বিভিন্নস্থানে নির্যাতন বা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নির্যাতিত মেয়েটির পরিবারের অভিভাবক থানায় থানায় অভিযোগ করেছে। আর এ অভিযোগের ভিত্তিতে মোছাঃ জুঁথী খাতুন নামের গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনাটি আরো ভালোভাবে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান।