পর্ব -২৯
আনান যেহেতু এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তাই নীল আজই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইনায়া গতকাল থেকেই নীলের সাথে কথা বলছে না। নীল কিছু বললেই তার জবাব আনায়া অথবা আনানকে দিচ্ছে। নীল সবাইকে রেডি হতে বললে ইনায়া আনায়ার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল,
-আমি সবসময় রেডিই থাকি,তোর বড় ভাইয়া কে বলে দে অনু।
আনায়া গতকাল থেকে এই কথা চালাচালির ডিউটি পালন করতে করতে ক্লান্ত।
নীলের দিকে তাকিয়ে বলল,
-শুনেছো?
নীল দাঁত বের করে হাসি দেয়। আনায়া পুনরায় বলে,
-বেতন টা দিয়ে দিও বড় ভাইয়া।
-হ্যাঁ তোর বোন তো চায় ই এভাবে যেন আমার পকেট থেকে বেশি বেশি টাকা খরচা হয়।
ইনায়া আবার কথা কেড়ে নিয়ে আনায়াকে বলে,
-তোর ভাইয়া যখন নেতাগিরি করে , তখন মানুষের পকেটে টাকা ঢুকিয়ে দেয় না? আর নিজের বোনকে দিতে গেলে তার এতো কথা শুনাতে হবে!
আনায়া বিরক্ত হয়। দুহাত দুজনের মুখের সামনে মেলে দিয়ে বলল,
-আরে থামো! তোর বোন তোর ভাই বলে কী শুরু করলা! তোমরাও তো তোমাদের ভাই বোনই!
ইনায়া মুখ কালো করে ফেলে কথা টা শোনা মাত্র। বলল,
-আমার কোনো ভাই নেই!
আনান ইনায়ার মুখে প্রথম বার শুনলো এমন কথা। তাই খুশিতে সুন্দর একটা হাঁসি দিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে সে। তখনই ইনায়া বলে,
-একমাত্র আনান ভাইয়া ছাড়া।
আনান সঙ্গে সঙ্গে মাথা তুলে ফেলে।
এদিকে মনের মধ্যে গান বাজছে তার,
“ফাইট্টা যায়,বুকটা ফাইট্টা যায়”
জোড়পূর্বক একটা হাঁসি দিয়ে ইনায়ার দিকে তাকায়।
.
পেছন থেকে রিফাত দাঁড়িয়ে নীলের বাহুতে ধাক্কা দিয়ে বলতে থাকে,
-আমার বোনের অভিমানটা দ্রুত ভেঙে দিয়েন।
-তুই আবার কথা বললি? তোর জন্য এই অবস্থা,শা*লা!
-মুরুব্বী মুরুব্বী! উঁহু উঁহু! শা*লা বলিয়া ভুল করিবেন না!
নীল কড়া দৃষ্টিতে তাকায় রিফাতের দিকে। সবার সামনে থাকায় বেশি প্রতিক্রিয়াও দেখাতে পারছে না।
.
.
.
.
দুপুরের খাওয়া দাওয়া আগে আগে করেই সবাই বেরিয়ে পড়েছে। সাথে রিফাত আর সানজিদাও এসেছে বাইকে। এয়ারপোর্টে পৌছাতে ইনায়া মুখ ভার করে গাড়ি থেকে নেমে সানজিদার কাছে যায়। সানজিদা ইশারায় ইনায়াকে বলে,
-বল ইনু…প্লিজ…
ইনায়া মাথা ঝাঁকিয়ে আচ্ছা বলে। সানজিদা কৃতজ্ঞতার হাঁসি দিয়ে রিফাতকে ডেকে বলল,
-ভাইয়া একটু ছবি তুলে দাও।
রিফাত ফোন বের করে এগিয়ে যায় সানজিদার সাথে। এদিকে ইনায়া একটু একটু করে নীলের দিকে আগাচ্ছে। কন্ঠ সম্ভব নিচু করে বলল,
-নীল ভাই…
নীল চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করল,
-কী হয়েছে ইনু? ভয় লাগছে?
ইনায়া মাথা নাড়িয়ে না বলে। বুকটা ফেটে কান্না পাচ্ছে তার। গলার ভেতরে কান্না দলা পাকিয়ে আসছে। ঢোক গিলে বলল,
-সানজিদা আপনাকে পছন্দ করে। আপনাকে এই কাগজটা দিতে বলেছে।
ইনায়া ছোট একটা কাগজের টুকরো বের করে নীলের দিকে এগিয়ে দেয়। একেবারে মুচরিয়ে হাতের ভেতরে গুঁজে রেখেছিল ইনায়া। হাত এগিয়ে চোখ বুজে মনে মনে বলল,
-প্লিজ নিয়েন না নীল ভাই…
যদিও ইনায়ার ধারনা ছিল নীল কাগজটা নিবে না। বরং ইনায়াকে বকা দিবে।তবে ইনায়ার মনের চাওয়াতে পানি ঢেলে নীল কাগজটা নেয়। শিষ বাজাতে বাজাতে কাগজটা খুলল সে।তাতে লেখা,
“গতকাল থেকে আপনি আমার মনের নেতা হয়ে গিয়েছেন। যদিও আগে থেকেই পছন্দ করতাম। সাদা পাঞ্জাবি তে আপনাকে শুদ্ধতম পুরুষ লাগছিল। অনেক ভালোবাসি আপনাকে। উত্তর টা ইনুর কাছে জানিয়ে দিবেন। “
নীল এক ঝলকে চিঠি টা পড়ে ফেলে। তারপর শিষ বাজাতে বাজাতে কাগজটা সমান করতে থাকে। কাগজ টান টান করে ইনায়ার দিকে তাকিয়ে আফসোস করে বলল,
-ইশ্ রে ইনু! একটা কাগজ ও যত্নে রাখতে পারিস না?
ইনায়ার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। নীলের অগোচরে দুফোঁটা পানি পড়ে চোখ থেকে। নীল পুনরায় বলল,
-এতো সুন্দর লেখা,একটু যত্ন করতে পারতি না তুই ? কী সুন্দর হাতের লিখা। মুক্তোর মতো।
আনানের দিকে তাকিয়ে বলল,
-কীরে আনান,ঠিক বললাম তো?
-হ্যাঁ হ্যাঁ বড় ভাইয়া। একদম ঠিক । এমন করে মুচড়িয়ে রেখেছিস কেন ইনু?
ইনায়া জবাব দেয় না। তার এখন ছুটে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। যেই ভাবা সেই কাজ। তবে ইচ্ছে মতো দূরে যেতে পারে না। তার আগেই নীল শক্ত হাতে ইনায়াকে টেনে ধরে। মুখ ঘুরিয়ে বলে,
-উমমম্ বার্তাবাহক এর মন খারাপ?
ইনায়া মাথা ঝুঁকিয়ে রেখেছে। নীল গালটা আলতো করে ঝাঁকিয়ে বলল,
-কীরে বল! বোনের হয়ে প্রেম নিবেদন করলি যে,খুশি না তুই?
আনান চিন্তিত হয়ে পড়ে। ইনায়ার হাত ধরে বলে,
-এই ইনু মন খারাপ কেন ?
নীল হাত টা কোনো রকমে ছাড়িয়ে নেয়। হেসে বলে,
-ইনুর মনে হয় ভাইয়ার জন্য ভাবি কে পছন্দ হয়নি। তাই না ইনু?
যাকে ভাই বলে মানে না তার মুখেই ভাইয়া কথা টা শুনতে হলো! হাতটা এভাবে না ধরে রাখলে ইনায়া ছুটে যেত এখান থেকে। ইনায়ার থেকে কোনো জবাব না পেয়ে নীল বলে,
-আচ্ছা চিন্তা করিস না। এটা ক্যান্সেল। আমার পছন্দ করাই আছে,তোকে বোধ হয় বলেছিলাম।
আনান সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায়। বলে,
-আমরা কী দোষ করেছি বড় ভাইয়া?
নীল জবাব না দিয়ে রিফাতকে ডাক দেয়। কপালে দুই আঙ্গুল দিয়ে বলে,
-দ্রুত কর ব্রো।
রিফাত আর সানজিদা এগিয়ে আসে। নীল পুনরায় চশমা টা চোখে দিয়ে সামিরাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-চিঠিটার উত্তর তোমার বোনকে না দিয়ে ভাই এর কাছে দেই?
সানজিদা হতভম্ব হয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে রিফাত না বুঝে প্রশ্ন করল,
-কীসের উত্তর ভাইয়া?
-তোর বোন আমাকে প্রেম পত্র পাঠিয়েছে।
-এ তো ভালো কথা!
কথাটা বলেই ইনায়ার দিকে তাকায়। তবে নীলের রাগী কন্ঠস্বর শুনে আবার প্রশ্ন করে,
-ওয়েট! কোন বোন?
-তোর কোন বোনকে নিয়ে আমি এভাবে অভিযোগ করব? কেমন ভাই তুই হ্যাঁ? আর ছেলেদেরকে কেউ প্রোপোজ করে? ছ্যাহ্! ওকে ভালো করে বুঝিয়ে দিস।
সানজিদা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রিফাতের কড়া দৃষ্টি তার দিকে। ইনায়ার চোখটাও ছলছল করছে। এতোক্ষণে মেয়েটার প্রায় জান যায় যায় অবস্থা। নীল আড় চোখে ইনায়াকে দেখে। সেদিকে তাকিয়েই রিফাতকে বলল,
-আর হ্যাঁ,আমি বিবাহিত তা জানাসনি কাউকে?
-প্রবলেম নেই ভাইয়া। তোমার দিকে তাকাবে না আর, পছন্দ করার বিষয় দূরে রাখো। আমি দেখছি !
সানজিদার হাত কাঁপছে। কারো দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না আর। তবে রিফাতের কন্ঠস্বর শুনে বোঝা যাচ্ছে সে কতটা রেগে আছে। রিফাত সানজিদাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে। ইনায়ার এতোক্ষণ চাপা কষ্ট লাগলেও এখন সানজিদার জন্যে মায়া হচ্ছে। রিফাত ওর নানুবাড়ির মধ্যে সবচেয়ে রাগী। না জানি সানজিদার কী করবে।
.
.
.
সমস্ত কার্যক্রম শেষ করে নীল, ইনায়া,আনায়া,আনান সকলেই প্লেনের কাছে চলে যায়। আনান কয়েকদিন যাবত ইনায়াকে একটা প্রশ্ন করতে চাচ্ছিল। আজ গাড়ি থেকে নেমে প্লেনে উঠার মুহুর্তে ইতস্তত করে বলল,
-ইনু,সামিন আইয়াজ কে?
ইনায়া কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে যায়। আনান হঠাৎ এমন প্রশ্ন করল যে! তবে নীল আনানকে বলে,
-এসব প্রশ্ন প্লেনে উঠে করা যাবে।
ইনায়া গলায় হাত নিয়ে এপিঠ ওপিঠ করে রাখল। ঘাম মুছে আবার হাঁটতে শুরু করে। দু একপা করে কোনো রকমে পা ফেলে ভাবতে থাকে,
-নীল ভাই আমায় ভুল বুঝলে?
নীল আর ইনায়া পাশাপাশি সীটে বসেছে, বিমানের ডান দিকের সারিতে। আনান আর আনায়া বাম দিকের সারিতে পাশাপাশি বসেছে। আনানের মনের মধ্যে প্রশ্ন টা ঘুরপাক খাচ্ছে। নিজের সিটে বসেই আবার বলল,
-আচ্ছা ইনু! বললি না যে? কে ঐ ছেলে ?
ইনায়া হাতের তালু দিয়ে মুখ মুছে নীলের দিকে তাকায়। নীলও ইনায়াকে দেখছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,
-সামিন আইয়াজ?
আনান জবাবে বলে,
-হ্যাঁ বড় ভাইয়া। এই ছেলেটা অনেক রোমান্টিক কমেন্ট করেছিল ইনায়ার সব পোস্টে।
-কই দেখি?
-পোস্ট গুলো তো ইনু ডিলিট করে দিয়েছে। তাই আমিও আইডি টা পাইনি।
ইনায়া এবার মুখ খোলে। তাড়াহুড়ো করে বলে,
-না না! আমি ডিলিট করিনি কিছু। ওগুলো একা একাই ডিলিট হয়ে গেছে।
-হ্যাঁ ওর পোস্টের ডানা হয়েছিল। তাই একা একাই উড়ে গেছে।
নীল আনানকে থামায়। ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
-বিদেশে থাকে সে?
ইনায়া মাথা নিচু করে হ্যাঁ বলে। আনান অবাক হয়ে নীলকে বলে,
-তুমি চিন বড় ভাইয়া?
-অবশ্যই। কাহিনী অনেক বড়।
আনায়া জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। ভাই বোনদের কথা নিয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই। এদিকে ইনায়া আর আনান নড়ে চড়ে বসে সামিনের ব্যাপারে শোনার জন্য। নীল গলা ভিজিয়ে বেশ ভাবের সাথে বসল। ভাষন দেওয়ার ভঙ্গিতে বলতে শুরু করল,
-এই সামিন আইয়াজ বিরাট ক্ষমতাবান একজন মানুষ। তাকে যে চিনবে না সে তো পুরুষ মানুষই না।
আনান ভ্রু কুঁচকে তাকায় নীলের দিকে। নীলের মতো একজন মানুষ রসিকতার সাথে হলেও কারো এতো প্রশংসা করছে এটা সে মানতে নারাজ। নীল আবার বলল,
-আচ্ছা শোন! তোদের কাছে অবাক লেগেছে যে আমি এতো দ্রুত দেশে আসলাম কী করে?
আনান ইনায়া একই সাথে মাথা নাড়ালো। নীল ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
-ইনু,তুই যে তোর নানুবাড়ি এসেছিস তা আর কাকে বলেছিলি?
-সা…সামিন আইয়াজ…
আনান চোখ টিপে বন্ধ করে দ্রুত খুলল। ইনায়ার দিকে তাকিয়ে রেগে বলল,
-তুই ঐ ছেলের সাথে কথা বলিস?
ইনায়া মাথা নিচু করে রাখে। তার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। যা তা কথা তো বলতো না সে। কোনো প্রশ্ন করলেই উত্তর দিয়েছে শুধু । এর বেশি কিছু না তো। তার জন্যে এতো কিছু? নীল আবার বলতে শুরু করে,
-আমাদের বাংলাদেশের ভেতরেই যাতায়াত করতে কত ফর্মালিটিস পূরণ করতে হয়েছে খেয়াল করেছিস?
ইনায়া দ্রুত মাথা নাড়ালো । তার মনের মধ্যে প্রশ্ন ছিল নীল কীভাবে এতো দ্রুত সব ম্যানেজ করে আসতে পারে।
-আসলে ইনুর যখন বরিশালে আসার কথা উনি শুনেছিল তখনই আমাকে দেশে পাঠানোর জন্যে সব ব্যাবস্থা করে দিয়েছিল। বুঝতে পারছিস কেমন ক্ষমতা ওনার?
আনান রাগে ফুঁসছে। চোখ লাল হয়ে গিয়েছে। কোনো রকমে ইনায়াকে বলল,
-তোর ফোন দে। ওকে এক্ষুনি ব্লক করব!!
-আহ্ আনান! একবার হসপিটালে ভর্তি হয়েছিস,সামিন আইয়াজ এর চোখে পড়লে হসপিটালেও পাঠানোর অবস্থা তে রাখবে না। আমরা দুই ভাই এসবের মধ্যে না যাই।
ইনায়া নীলের কথা গুলো শুনে কান্না করে ফেলে। নীলের হাত শক্ত করে ধরে কান্না করতে করতে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নেয়। থেমে থেমে বলে,
-নীল ভাই… ওনাকে আমি চিনি না। আমি কথা বলতে চাইনি নীল ভাই। আপনি প্লিজ ওনার কাছে আমাকে ছেড়ে দেবেন না…
-এই ! আমি কি মেয়ে ধরা? আর তোকে কেউ কিছু বলেছে? শুধু কথা বলা বন্ধ না করলেই হয়। যে মানুষ দেওয়ান নীল কে এতো দ্রুত দেশে আনতে পারে তার ক্ষমতা সম্পর্কে তোদের আর কোনো ধারনা দিতে হবে না আশা করি।
-ওনাকে আমার ভালো লাগে না নীল ভাই। একটুও ভালো লাগে না। সামিরার ভাই বলে কথা বলেছিলাম। আমি আপনি ছাড়া আর কারো সাথে কথা বলব না।
আনান পরপর দুটো কথা ইনায়ার মুখে শুনে অবাক হয়। তবে দ্বিতীয় কথাটির চেয়ে প্রথম কথা গুরুতর লাগে বেশি। বলে,
-সামিরার ভাই মানে? তোর ঐ ফ্রেন্ডের ভাই?
ইনায়া চোখ মুছে বলল,
-হু ,ওর কাজিন….
নীল নিজের হাতের উপর থেকে ইনায়ার হাতটা সরায়। শীতল গলায় বলে,
-আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলি যে এতো দ্রুত কী করে এলাম। তখন বলতে পারিনি সব। এখন যেহেতু তোরা কথা তুলসি,তাই বলে দিলাম বিষয় টা। ইনু!
ইনায়া ছলছল চোখে নীলের দিকে তাকায়। কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,
-হু…
-I guess he loves you desperately .
ইনায়ার অসহ্য রকমের খারাপ লাগছে। ভালোবাসার মানুষের মুখ থেকে আরেক পুরুষের ভালোবাসার কথা শোনার থেকে কষ্টের বিষয় বোধহয় আর কিছু পৃথিবীতে নেই।
.
.
.
.
বাড়িতে আসার পর থেকে আনান আর ইনায়া কারো মনই ভালো নেই। দুজনেই যে যার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করেছে। বের হওয়ার নাম নেই কারো। ইনায়া বাড়িতে ঢোকার পর থেকেই ফোন বন্ধ করে রেখেছে। অপরদিকে আনান ফেসবুকে ঢুকে সামিরার আইডি সার্চ করতে থাকে। ইনায়ার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করতে করতে অবশেষে সামিরার আইডি পায় সে। আইডি তে ঢুকতেই দেখে সামিরা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে রেখেছিল। আনান দেখা মাত্রই একসেপ্ট করে নেয়। এদিকে সামিরার কাছে নোটিফিকেশন আসতেই তার খুশিতে গদগদ অবস্থা। ইনায়া আর শর্মীর কাছে গ্রপ কল দেয়। ইনায়া অনলাইন না থাকলেও শর্মী কল ধরে। শর্মী জয়েন হতেই সামিরা লাজুক হেসে বলল,
-আনান ভাই আমার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছে দোস্ত! যদিও দেরি করে ফেলেছে। কিন্তু ব্যাপার না!
-কাল কলেজে মিষ্টি নিয়ে আসবি অবশ্যই। নাহলে কিন্তু দোয়া করব না,পরে আবার আনফ্রেন্ড করে দিবে।
-না দোস্ত! এসব বলতে হয়না। নিয়ে আসব। ইনুর খবর জানিস?
-আপাতত আমার সংসার এর খবর নিতে নিতে সব গুলিয়ে ফেলেছি বন্ধু! তোমরা সাবধানে থেকো।
-আসলে কোনো এক মহান ব্যক্তি ঠিকই বলেছিল। বিয়ের পর সব মেয়েই পর হয়ে যায়! বন্ধু দের গোনারও সময় থাকে না।
-সেন্টি খাচ্ছিস কেন?
-বন্ধু তুমি থাকো সুখে,আগুন জ্বলুক আমার বুকে….বিদায়।
সামিরা কল কেটে দেয়। এদিকে শর্মী এখনো ভাবছে সামিরা এসব কী বলে গেল!
দুদিনের দুনিয়াতে বারো মাস ইমোশনাল হয়ে থাকলে হবে?
(আপনাদেরকে চমকে দিতে বলেছিল কোনো এক মহান ব্যক্তি। বলল,এই এপিসোডে সবাইকে হালকা হিন্টস দিতে। তাই দিলাম আরকি,don’t mind,hae?)
পেইজ: সবার আগে গল্প পাওয়ার জন্য রোমান্টিক প্রেমের গল্প পেইজটি নীল লেখায় চাপ দিয়ে ফলো করে রাখবেন
(চলবে……)
আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন